Saturday, July 4, 2020

লোক-এর কর্মকাণ্ড ও আমার লোককাণ্ড

এমন নয় যে, শামীমুল হক শামীমের সাহিত্যকর্মের আমি খুব ভক্ত, কিন্তু লোক সম্পাদক অনিকেত শামীমের সাংগঠনিক প্রতিভায় আমার মুগ্ধতার কোনো শেষ নেই। একজন মানুষ সমাজ-সংসার লগ্ন থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে নিজের পড়ালেখার কাজটিতে বিঘ্ন ঘটিয়ে হলেও অব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট লোকজনের পেছনে লেগে থেকে কী করে দিনের পর দিন সম্পাদনার কাজটি অব্যাহতভাবে চালিয়ে যেতে পারেন, তার কোনো কূল-কিনারা আমি খুঁজে পাই না। শুধু যদি সম্পাদনাসীমার আওতায়ই তাঁর কাজ শেষ হতো তাও একভাবে হিসেবটা মেলানো যেত, কিন্তু তিনি বিভিন্ন সময়ে সম্পাদনাতিরিক্ত এমন বিশাল সব কর্মযজ্ঞ ফেঁদে বসেছেন যে শুরুতে অনেকটা অসম্ভব মনে হলেও শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে যে ঠিকঠাক সাফল্যের সঙ্গেই তা সম্পাদিত হয়ে গেছে। এসব করতে সংগতির পাশাপাশি অপরিমেয় সাহস লাগে, অনিঃশেষ ধৈর্য লাগে, লাগে জনসংযোগ ও জনসমর্থন; যার সবই তাঁর প্রভূত পরিমাণে আছে।

প্রবাদ আছে, বোবা ও নিষ্কর্মার কোনো শত্রু থাকে না। এর মানে হলো, কথক ও কর্মীর থাকে, থাকতে পারে। কথা যত তীর্যক ও আক্রমণাত্মক হয়, কাজ যত দৃশ্যমান ও প্রভাবসঞ্চারী হয়, শত্রুতার মাত্রা হয় তত তীব্র। আমার পর্যবেক্ষণে দেখেছি, কথায়-লেখায় তিনি যথেষ্ট নমনীয়, প্রায় সময়ই অনাক্রমণাত্মক, একজন সফল সংগঠকের কাছে যেটা প্রত্যাশিত। কিন্তু তবু তাঁর কিছু শত্রুপ্রতিম নিন্দুক রয়েছে, মনে হয় এঁরা সশস্ত্র হয়েছে মূলত তাঁর প্রভাবসঞ্চারী দৃশ্যমান কর্মকাণ্ডের কারণেই। কোনো সংগঠকই সবার মন জয় করতে পারেন না, পারা উচিতও নয়। সংগত কারণে তিনিও পারেন নি। ওই তালাবন্ধ মনওয়ালারাই তাঁর চিহ্নিত নিন্দুক। এঁদের সমস্ত মনপাহাড় ডিঙিয়েই একের পর এক লোক-এর বিপুলোদ্যোগসমূহ গৃহীত ও সম্পন্ন হয়ে চলেছে। হয়ত চলতে থাকবে আরো অনেক দিন, যেহেতু অনিকেত শামীমের মধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যমের ঘাটতি এখনো তেমনভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে না। যদিও লোক সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯-এর পরে আর দেওয়া হবে না বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধমে একটা ঘোষণা আমার চোখে পড়েছে। এটি চালু রাখা বা বন্ধ হওয়া বিষয়ে আমার দিক থেকে কোনো ওকালতি নেই।

আমার জানামতে, অজস্র উদ্যোগের মধ্যে ২০০৯-এ লোক-এর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রবর্তিত লোক সাহিত্য পুরস্কারই বেশি বিতর্কউসকানিয়া ব্যাপার ছিল। পুরস্কারকে লেখালেখির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে হয় না আমার। কিন্তু আন্তর্জাতিক ও দৈশিক প্রেক্ষাপটে পুরস্কারসংস্কৃতি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আছে, লোক সাহিত্য পুরস্কার যেগুলোর একটি; যেটি প্রদান করে 'লোক' নামক একটি লিটল ম্যাগাজিন। পুরস্কারের গ্রহণযোগ্যতা ও মর্যাদা নির্ভর করে সেটি কারা দিচ্ছে, কাদের দিচ্ছে, কীভাবে দিচ্ছে তার ওপরে। অনেক সময় অবশ্য পুরস্কারের অর্থমূল্যকেও গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। লোক পুরস্কারের বর্তমান অর্থমূল্য তেমন বৃহদাংকের নয়, মাত্র ৫০ হাজার টাকা; কিন্তু এর সবচাইতে মূল্যবান প্রদেয় হচ্ছে ঘোষণার পরের বছর পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকের জীবন ও সাহিত্যকর্মের ওপর বিশ্লেষণী লেখাপত্র নিয়ে ঢাউস একটি বিশেষ সংখ্যা অবমুক্তকরণ। পৃথিবীতে এরকম আর কোনো পুরস্কার আছে কি না আমার জানা নেই। সুতরাং প্রকাশ্যে এই পুরস্কারটির নিন্দা করা হলেও অনেক লেখকের মধ্যেই এটি পাবার একটা আকাঙ্ক্ষা সুপ্ত থেকে যাওয়া বিস্ময়কর নয়। যাঁরা অনেক চেষ্টা-তদবির করেও সুবিধা করতে পারেন নি, তাঁরা একসময় এর নিষ্ঠাবান নিন্দুকে পরিণত হয়েছেন। মানবচরিত্র এমনই, মহাজনরা বলে গেছেন! তবে পুরস্কারের অর্থমূল্য ও অন্যান্য যা কিছু প্রদেয় তার সবটাই গ্রহণ করে পরে লোক-এর শত্রু বনে গেছেন এবং দিনের পর দিন লোক ও এর কর্মকাণ্ডের প্রতি সার্বিক অসহযোগিতা জারি রেখেছেন যাঁরা, তাঁদের এরকম আচরণের যৌক্তিক ভিত্তি কী তা আমি অবশ্য স্পষ্ট করে জানি না। এ অংশের থেকে পাওয়া বেদনাভারও হয়ত অনিকেত শামীমকে লোক পুরস্কার বন্ধ করে দেবার ঘোষণা প্রচারে প্রণোদিত করে থাকতে পারে।
   
এটা ঠিক যে, পুরস্কার নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা কাণ্ডকাহিনি চলে। নিজে সংগঠন তৈরি করে, নিজেই পুরস্কার ও অনুষ্ঠানের অর্থ জোগান দিয়ে নিজেই সেই পুরস্কার গ্রহণ করে মিডিয়াবাজির মাধ্যমে স্বার্থ হাসিল করবার কাহিনিও এদেশে রয়েছে এন্তার। এগুলো হলো ভুঁইফোড়দের পুরস্কারকাহিনি। আবার রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত কোনো কোনো সাহিত্য পুরস্কারের ক্ষেত্রেও অনেক তেলেসমাতি কাণ্ড ঘটতে দেখা যায়। বিস্ময়করভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেখককে গণনায় না এনে রাজনৈতিক বিবেচনায় গৌণ লেখককে পুরস্কার প্রদানই অনেকটা তাদের সংস্কৃতি। এসব কারণে আজকাল পুরস্কার ব্যাপারটাকেই অনেকে সন্দেহের চোখে দেখে থাকেন। এভাবে যাঁরা দেখেন তাঁদের দোষও দেওয়া যায় না। কিন্তু আমার জানামতে, লোক পুরস্কার এসব আপত্তিকর প্রবণতা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত। এমনকি, এজন্য লেখক বা প্রকাশককে লোক দপ্তরে দুই বা পাঁচ কপি বইও জমা দিতে হয় না, কিংবা কোনো বন্ডে স্বাক্ষরও করতে হয় না।

এ যাবৎ যতজন কবি, কথাসাহিত্যিক ও চিন্তককে লোক সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে উজ্জ্বল, যাঁরা এর চাইতে বড় পুরস্কারও ডিজার্ভ করেন। ওই তালিকায় একমাত্র আমিই ব্যতিক্রম, মানে লেখক হিসেবে কমজোর। জানি, আমার এই স্বতঃপ্রকাশ কাউকে কাউকে খুশি করবে! করুক বরং। এই যে এতগুলো মানুষকে এই অবেলায় খুশি করতে পারা গেল, আমার লোককাণ্ডে এটাই সবচাইতে বড় লাভের দিক ভাবি।

লোক-এর সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা এর আঁতুড়ঘর থেকেই। অধুনাবিলুপ্ত গণসাহায্য সংস্থার চাকুরি হারিয়ে তখন আমি প্রায় বছরদুয়েক ধরে ট্যাবলয়েট দৈনিকের সাপ্তাহিক পাতা এডিটিং, বিজ্ঞাপনী সংস্থার কপিরাইটিং, বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার প্রুফরিডারি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের বুক ইনভেন্টরির জন্য ইনফরমেশন কালেকশনের মতো খণ্ডকালীন কাজ করে ঢাকা শহরে টিকে-বেঁচে ছিলাম, কিন্তু কোথাও থিতু হতে পারছিলাম না। কাজের ফাঁকে রাতেদিনে অনেকটা করে সময়ই তখন কাটত আজিজ সুপার মার্কেটে, যেটি ছিল আমার দিক থেকে অনেকটা নিউক্লিয়াসের মতো। তখনই একদিন শামীম ভাই (তখনো তিনি অনিকেত শামীম হয়ে ওঠেন নি) প্রস্তাব দেন লোক নামে প্রকল্পিত একটি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশে সহযোগিতা করবার। শুনেছি আগে তিনি ওই কাজের দায়িত্ব আরো দুজন তরুণ কবিকে দিয়েছিলেন, কিন্তু কেউই কাজটি শেষ করতে পারেন নি। পুরো কাজের আওতাটি বুঝে আমি এর সঙ্গে যুক্ত হতে সাগ্রহে সম্মত হই, কারণ এ ধরনের কাজ আমার কাছে অনেকটাই ডালভাত ছিল। একজন গবেষক কাম প্রাবন্ধিকের সাহিত্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা ততদিনে প্রি-প্রেস এবং প্রেসসংক্রান্ত কাজে আমাকে বিস্তর দক্ষতা এনে দিয়েছিল।

আজিজ মার্কেটের দোতলায় তখন টুকটাক প্রি-প্রেস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শামীম ভাইয়ের নিজস্ব অফিস ছিল, এমনকি ছিলেন একজন কম্পোজিটরও। আমি অন্যান্য খণ্ডকালীন কাজ শেষে প্রতিদিন আজিজ মার্কেটে ফিরে আড্ডার সময় খানিকটা কমিয়ে ওই অফিসে বসতে শুরু করি। ক্লান্ত লাগলে বাইরে গিয়ে আড্ডায় শামিল হই, আবার কাজে ফিরি। ততদিন পর্যন্ত লোক-এর জন্য যেসব লেখাপত্র শামীম ভাইয়ের কাছে সংগৃহীত ছিল, সেগুলোর একাংশ কম্পোজ করা থাকলেও বৃহদাংশই ছিল হাতে লেখা কপি। ওসব লেখা কম্পোজ করিয়ে প্রুফ সংশোধন করা, সূচি ও পৃষ্ঠাবিন্যাসের একটি ইউনিক ফরমেট তৈরি করে সে অনুযায়ী রচনাসমূহ বিন্যস্ত করা, বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনের আলোচনা লেখা, বিশেষত তরুণ কবিদের কবিতাগ্রন্থের বিজ্ঞাপন তৈরি করা, লোক প্রকাশিত মাহবুব কবির সম্পাদিত নব্বইয়ের কবিতার দীর্ঘ সমালোচনা লেখার কাজ আমি ওখানে বসেই করেছি। এ ছাড়া, অফিস শেষে শামীম ভাই এলে লোক-এর সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং এ সংখ্যায় আর কী কী থাকতে পারে, কার কাছ থেকে কী লেখা নেওয়া যায় ইত্যাদি সিদ্ধান্ত গ্রহণেও আমার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এমনকি লোক-এর প্রধান ক্যাপশন ‘বাংলা ভাষাভাষীদের পত্রিকা’ নির্ধারণে আমার ভূমিকাও আশা করি শামীম ভাই ভুলে যান নি।

লোক-এর প্রথম সংখ্যার প্রিন্টার্স লাইনে আমার নাম নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেই থাকতে পারত, কিন্তু শামীম ভাইয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে আমার ব্যাপক অনাগ্রহ ছিল। অনাগ্রহের নেপথ্য কারণ ছিল প্রধানত দুটি : এক. অদৃশ্য কর্মকার হিসেবে দূর থেকে নিজের ক্রিয়াকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া দেখতে আমার ভালো লাগে, যেরকম কাজের অভিজ্ঞতা আমার জীবনে আরো কিছু আছে; এবং দুই. এ কাজের জন্য শামীম ভাই তৎকালীন ঊনবেকার মুজিবকে যৎকিঞ্চিৎ পারিশ্রমিকও দিয়েছিলেন, যদিও তা আমার এখনকার মাসিক সিগারেট খরচের অর্ধেকেরও কম হবে। কিন্তু আজ থেকে কুড়ি বছর আগে সে পরিমাণ অর্থও আমার কাছে তেমন অপ্রতুল ছিল না।

বলতে কী, লোক-এর প্রথম সংখ্যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। আগস্ট ১৯৯৯-এ প্রথম সংখ্যা প্রকাশের দুই মাসের মাথায়ই এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করতে হয়, যে সংস্করণে কবি মোহাম্মদ রফিক-এর একটি গদ্য সন্নিবেশিত হয়েছিল। অবশ্য তার পূর্বেই সেপ্টেম্বর ১৯৯৯-এ আমি আমার বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করি, ২০১৯-এ যেখানে আমারও ২০ বছর পূর্তি ঘটল। যাহোক, দিবাভাগে খরচযোগ্য সময় তখন আমার ছিল না বটে, তবু লোক-এর ওই সাফল্যের উষ্ণতা আমি খুব কাছে থেকেই অনুভব করতে পেরেছিলাম।

প্রথম সংখ্যার সাফল্যে শামীম ভাইয়ের লোকোদ্যম বেড়ে যায়। দ্বিতীয় সংখ্যা পরিকল্পিত হয় শক্তিমান কবি বিনয় মজুমদারকে কেন্দ্র করে। সম্ভবত প্রথম সংখ্যায় রাখা আমার ভূমিকার প্রতি তাঁর আস্থা তৈরি হয়ে থাকবে, যে কারণে পরিকল্পিত বিনয় সংখ্যায়ও তিনি আমার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। বাংলাদেশ অংশের সহযোগী সম্পাদক হিসেবে সে সংখ্যার জন্যও আমি অনেক পরিশ্রম বিনিয়োগ করি। আমার পরিবার তখনো ঢাকায় শিফট করে নি বলে অফিসপরবর্তী আড্ডার সময়ের একাংশ এখানে ব্যয় করবার সুযোগ তখনো অবারিত ছিল। সে সুযোগটা ওখানে কাজে লেগেছিল। পুরো ২০০০ জুড়ে মুদ্রিত-অমুদ্রিত লেখা সংগ্রহ ও প্রি-প্রেস কার্যক্রম শেষে ২০০১-এর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় প্রায় চারশ পৃষ্ঠায়তনের বিনয় মজুমদার সংখ্যা।

আমাদের এখানে সাধারণত কীর্তিমান লেখক-কবিরা মৃত্যুবরণ করলে তাঁকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা করবার রেওয়াজ চলে আসছিল। কিন্তু একজন কবির জীবিতাবস্থায়ই তাঁকে নিয়ে বিশেষায়োজনের আইডিয়াটা বেশ চমকপ্রদ ছিল। এদেশে বিনয়ের জনপ্রিয়তা তুমুল। ‘কবিতার শহীদ’ বিনয় এখানে ততদিনে মিথপ্রায়। সেই সুবাদে সংখ্যাটি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দুই পাশেই লেখক-পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সঞ্চার করে। ২০০৬-এ বিনয় মজুমদারের মৃত্যুর পর এখানে আরো কোনো কোনো ছোটকাগজ তাঁকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে, কিন্তু লোক-এর ওই সংখ্যাটিই ছিল মৃত্যুপূর্বকালে এদেশে বিনয় মজুমদারকে অত বৃহদায়তনে স্মরণ।

লোক এখনো পর্যন্ত কমবেশি সূচনাকালীন ফরমেট ধরেই প্রকাশিত হয়ে আসছে, যদিও পরবর্তী কোনো সংখ্যায়ই আমার পক্ষে আর আগের মতো সময় দেওয়া সম্ভব হয় নি। তবে কখনো কখনো লেখক হিসেবে, কখনো-বা তদতিরিক্ত নেপথ্য সহায়তাকারী হিসেবে এক ধরনের লোকসম্পৃক্ততা আমার এখনো অব্যাহত আছে। নিশ্চয়ই থেকেও যাবে।

মাত্র ২০ বছরে লোক-এর অর্জন বিস্তর। আমার মনে হয়, বিপুল গাম্ভীর্য আছে কিন্তু প্রভাবসঞ্চারী কাজ নেই, শুদ্ধাচারী এমন লিটল ম্যাগাজিনের চাইতে মিশ্রাচারী লোক-এর প্রয়োজন সাহিত্যসমাজে অনেক বেশি। এখানে যে মিথষ্ক্রিয়ার সুযোগ আছে, ওখানে তা নেই। দীর্ঘ ২৫ বছরব্যাপী লিটল ম্যাগাজিন পাড়ায় বসবাসসূত্রে এটা আমার অন্যতম প্রতীতি। এ সংক্রান্ত আমার বাদবাকি প্রতীতিসমূহ অন্য সময়ে অন্যত্র ক্রমপ্রকাশ্য...

লোক-এর দুইযুগ পূর্তি সংখ্যায় প্রকাশিত, ডিসেম্বর ২০১৯

No comments:

ভাষাবস্তু অবয়বে ধরে রাখে ভাষাচিন্তারেখা

ধর্মতত্ত্ব, বিবর্তনতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব প্রভৃতি বিষয়ে অত্যল্প জানাশোনা আমাকে এরকম একটা গড় ধারণা দেয় যে, মানবপ্রজাতি আদিতে এক গোষ্ঠীভুক্ত ছিল। বি...